সেক্স এডুকেশন’ আর ‘সেক্স এক নয় - BD Health Barta

সেক্স এডুকেশন’ আর ‘সেক্স এক নয়

যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত সম্প্রতি এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ইন্টারনেট পর্নোগ্রাফি এমন একটি তরুণ প্রজন্ম তৈরি করছে, যারা শোবার ঘরে একেবারেই হতাশাজনক। নতুন এই মিডিয়া উঠতিবয়সী তরুণগোষ্ঠীকে এতই আকৃষ্ট এবং প্রভাবিত করছে যে, তারা প্রকৃত নারীর সান্নিধ্যে তেমন একটা উত্তেজনা অনুভব করছে না। যৌন অক্ষমতা এখন কেবল আর ব্যথাতুর শরীরের প্রবীণ কিংবা প্রৌঢ়দের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়; এটা এখন তরুণ জনগোষ্ঠীর ভেতরও প্রকট হতে শুরু করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানজনক গবেষণা জার্নাল ‘সাইকোলজি টুডে’র একটি গবেষণাপত্রে সম্প্রতি উল্লেখ করা হয়েছে, এ বিষয়টি এখন এতই স্বাভাবিক হয়ে গেছে যে, মাত্র ২০ বছরের তরতাজা যুবকও প্রকৃত অর্থে স্বাভাবিক যৌনাচরণ করতে পারছে না। ‘পর্নো ছবির কারণে স্বাভাবিক যৌনাচরণ ব্যাহত, একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা’- নামে ওই প্রতিবেদনে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, সময়ের আগেই অর্থাৎ বয়স ত্রিশেই যৌনক্ষমতা কমে যাবার কারণ হচ্ছে মস্তিষ্কে ‘ডোপামাইন স্পাইক’ নামক এক প্রকারের নিউরোট্রান্সমিটারের অত্যধিক ক্ষরণ। এই নিউরোট্রান্সমিটারের কাজ হলো শরীরে যৌনানুভূতি বয়ে আনা। আর ইন্টারনেট পর্নোগ্রাফির এ উত্তেজনায় একবার অভ্যস্ত হয়ে গেলে তখন সাধারণ নারীতে আর সেই উত্তেজনা আসে না এবং ব্রেইনে সঠিক সিগন্যাল পাঠাতে ব্যর্থ হয়। ফলে তারা সাময়িক নপুংসক হয়ে যায়।রিপোর্টটির লেখিকা মারনিয়া রবিনসন্স বলেন, যৌন উত্তেজক গল্প, ছবি, ভিডিও এগুলো আগেও ছিল। কিন্তু ইন্টারনেটের ফলে কম্পিউটারে অনেকগুলো উইন্ডো ওপেন রেখে পর্নোছবি দেখে মানুষ। আর সঙ্গত কারণেই এই ‘ডোপামাইন স্পাইক’ সীমাহীন পর্যায়ে চলে যেতে পারে। ফলে এর প্রভাব অনেক বেশি ক্ষতিকর। অনেক যুবকের ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে, তাদের ওপর এই ডোপামাইন স্পাইকের প্রভাব এতই বেশি, ইন্টারনেটের মাধ্যমে ক্রমাগত পর্নো না দেখলে তারা যৌন উত্তেজনাই অনুভব করে না। তাদের কেউ কেউ খুবই হতাশ হয়ে পড়েন যখন দেখতে পান তাদের স্বাভাবিক যৌন জীবন আর স্বাভাবিক থাকছে না। পাশাপাশি অনেকেই জানে না, ইন্টারনেট পর্নোগ্রাফি এভাবে যৌন উত্তেজনাকে কমিয়ে ফেলতে পারে এবং এটা জানার পর তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। মনোযোগহীনতা, অস্থিরতা, ঘুমহীনতা (ইনসোমনিয়া), হতাশা ইত্যাদিতে ভোগে সহজেই।রবিনসনের মতে, এর থেকে মুক্তির উপায় হলো ব্রেইনকে আবার রিবুট করা। অর্থাৎ পর্নোগ্রাফি দেখা একদম বন্ধ করে দেয়া এবং কয়েক মাস পুরোপুরি বিশ্রাম নেয়া। এর ফলে ব্রেইন থেকে সেই অতি উত্তেজনাকর সিগন্যালগুলো দুর্বল হয়ে যাবে এবং একটা সময় সেই মানুষটি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতেও পারে।উঠতিবয়সী তরুণদের হাতে এখন কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট রয়েছে। এর অর্থ হলো, তাদের কাছে পর্নোগ্রাফি ২৪ ঘণ্টাই হাতের কাছে রয়েছে। আর ওই বয়সে একবার তাতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে, তার পুরো জীবনের ওপর সেটা প্রভাব ফেলতে বাধ্য। প্রতিটি বাবা-মা’র উচিত হবে, এ বিষয়গুলো তার সন্তানদের ভালো করে বুঝিয়ে দেয়া এবং তরুণ বয়সী ছেলেমেয়েদের বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা। মনে রাখতে হবে, ‘সেক্স এডুকেশন’ আর ‘সেক্স’ এক জিনিস নয়। ‘সততার সহজাত পুরস্কার এবং যৌনানুভূতির প্রাকৃতিক গোপন অভিব্যক্তি ব্যক্তিজীবনকে পুরস্কৃত করে’ জানানোই এ গবেষণার উদ্দেশ্য জানান রবিনসন।

Popular Posts

Sort Posts by Month

Search This Blog

Total Pageviews